Skip to main content

Raees (রইস)


রইস শব্দটার বাংলা অর্থ 'অভিজাত'। অভিজাতরা সাধারণত অপরাধ করে, আর তাদের অপরাধ কখনোই অপরাধ বলে গণ্য হয় না। আর হিন্দি বা বাংলা সিনেমায় তো অভিজাতেরা ভুল (?) বুঝতে পেরে ক্ষমা চাইলেই চলে। তার ওপর সেই 'রইস' যদি হয় সিনেমার নায়ক, তবে তো কথাই নেই। তারা নিজেরাই আত্মসমর্পণ করে, এক দৃশ্য পরেই দেখা যায় নায়ক জেল থেকে বেরিয়ে আসছে। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে নায়িকাসহ পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজন। একজন কমেডিয়ানও থাকবে। নায়ক-নায়িকা মিলবে, সবাই হাসিহাসি মুখ করে দাঁড়াবে, আর সঙ্গে সঙ্গে 'হ্যাপি এন্ডিং' হয়ে যাবে।

অন্য রকমও হয়। যেমন শ্যুট আউট অ্যাট ওয়াডেলা, আন্স আপোন আ টাইম ইন মুম্বাই বা গ্যাংস অব ওয়াসেপুর। ভারতীয় উপমহাদেশে এমন সিনেমা নিশ্চয়ই আরো কতক আছে। তাৎক্ষণিকভাবে এই ক'টাই মনে পড়লো। এমনি আরেকটা সিনেমাই 'রইস'। গ্যাংস অব ওয়াসেপুর-এর মতো উচ্চতারে বাঁধা নয় সিনেমাটি, কিন্তু শেষের সমীকরণ মানুষের মনে এক ধরনের অাশাবাদ জন্ম দেয়। তবে নায়ককে 'রবিনহুড' বা 'দস্যু বনহুর' ধরনের ইতিবাচক ইমেজ দেয়ার চেষ্টা লক্ষণীয়।

দস্যু বনহুরের মতোই রইসও অবৈধ পথে টাকা কামাই করে, যদিও বনহুর ডাকাতি করতো, আর রইসের পেশা হলো অবৈধভাবে মদ বিক্রি। এসব মদ কোত্থেকে আসে সেটা জানা যায় না বটে, তবে পুলিশ ও রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষকে ঘুষ দিয়ে যে এ ব্যবসা করা যায় সেটা দেখা যায় বাস্তবের মতোই। রইস কৈশোর থেকেই বন্ধু সাদিককে সঙ্গে নিয়ে 'গডফাদার' জয়রাজের অধীনে গুজরাটের ফতেপুরে মদ পাচারের কাজ করে। স্মর্তব্য, গুজরাটে মদ কেনাবেচা আইনগতভাবেই পুরোপুরি নিষিদ্ধ।

ধারণা করা হয় গুজরাটের আন্ডারওয়ার্ল্ড কর্তা আব্দুল লতিফের জীবনীর ছায়া অবলম্বনে রইস সিনেমা তৈরি করা হয়েছে যদিও সিনেমাটির চিত্রনাট্যকার রাহুল ঢোলাকিয়া ও অন্যান্যরা এটা অস্বীকার করেছেন। লতিফ ছোটবেলায় জুয়ার টেবিলে মদ সরবরাহ করতেন এবং ধীরে ধীরে গুজরাটের অপরাধ-জগতের শীর্ষে উঠে আসেন।

সিনেমায় দেখা যায়, রইস ও সাদিক ছাগল নিয়ে মুম্বাই রওনা হয় যাতে ছাগল বিক্রি করে ঈদে আনন্দ ফুর্তি করতে পারে। গুজরাটি ছাগলের খ্যাতি আছে পুরো ভারত জুড়ে। ঘটনা পরম্পরায় মুম্বাইতে দেখা হয় মুসা ভাইয়ের সঙ্গে যিনি মুম্বাইয়ের অপরাধ-জগত নিয়ন্ত্রণ করেন। মুসা ভাই আনুগত্যের পরীক্ষা নিয়ে রইসকে মোটা টাকা দেন নিজ ব্যবসা দাঁড় করানোর জন্য। শুরু হয় রইসের আসল কাহিনী।

নিজ বুদ্ধি, পেশিশক্তি আর সুনাম ব্যবহার করে রইস হয়ে ওঠে অপ্রতিদ্বন্দ্বী আর তাই তাকে মারার জন্য পেশাদার খুনি ভাড়া করা হয়। এদিকে থানার নতুন পুলিশ অফিসার জয়দীপ আম্বালা মজুমদার গুজরাট থেকে অবৈধ মদের ব্যবসা তুলে দিতে বদ্ধপরিকর। অন্যদের দমন করতে পারলেও রইসকে সে কোনোক্রমেই ধরতে পারে না। রইসের পেছনে প্রধান সহায়ক হিশেবে থাকেন রাজ্যের স্বয়ং মূখ্যমন্ত্রী। মূখ্যমন্ত্রীর সহায়তায় পুলিশ অফিসার মজুমদারকে থানা থেকে কন্ট্রোল রুমে বদলি করা হয়। রইস ভাবে যে এবার সে শান্তিতে ব্যবসা করতে পারবে। কিন্তু মজুমদার কন্ট্রোল রুম থেকে রইসের সব ফোন ট্যাপ করে এবং সব পরিকল্পনা আগে থেকেই জেনে যায়।

 ইতোমধ্যে স্থানীয় এমপি পাশা ভোট পাবার জন্য রইসের এলাকাতেই মাদকবিরোধী মিছিলের আয়োজন করে। এই মিছিলে হামলাই সুলতানের জন্য কাল হয়ে আসে। রইস মিছিলে হামলা করে এবং ফোন ট্যাপ করার সুবাদে পুলিশ সেটি আগেই জেনে যায়।মূখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে ও আশ্বাসে জেলে যায় রইস। এদিকে পাশার সঙ্গে মিলে যান মূখ্যমন্ত্রী। রইসের কাছে সে খবর পৌঁছালে সে জেল থেকে বেরিয়ে নিজেই এমপি নির্বাচনে প্রার্থী হয়। এতে মূখ্যমন্ত্রী আরো ক্ষেপে যান। তিনি রইসের নির্মাণাধীন স্বপ্নের কলোনির এলাকাটি ‘গ্রীন জোন’ ঘোষণা করেন। আইনানুসারে গ্রীন জোনে কোনো ভবন নির্মাণ করা যায় না। ইতোমধ্যে ফ্লাট বিক্রি করে রইস যাদের কাছ থেকে অগ্রীম টাকা নিয়েছিলো তাদের সবার টাকা ফেরত দেয়ার প্রশ্ন চলে আসে। টাকার জন্য রইস আবারও মুম্বাইয়ে মুসা ভাইয়ের কাছে যায়।

এরই মধ্যে অন্য সব বাণিজ্যিক সিনেমার মতো এ সিনেমায়ও আসিয়া আলমের সঙ্গে রইসের প্রেম হয়। তাদের বিয়ে হয় এবং জন্ম নেয় একটা সন্তান। রইস স্ত্রী সন্তানদের রেখে মুম্বাই গেলে মুসা ভাই সোনা পাচার করে গুজরাটে পৌঁছে দেয়ার বিনিময়ে টাকা দিতে রাজি হন। রইস প্রস্তাবটি লুফে নেয় এবং কাস্টমস্ ও কোস্টগার্ডের কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে মাল গুজরাটে পৌঁছে দেয়। এরই মধ্যে গোয়েন্দারা খবর দেয় যে রইসের চালানের মধ্যে মূলত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বোমার সরঞ্জাম ছিলো যা আরডিএক্স নামে পরিচিত।

রইসের পায়ের তলার মাটি সরে যায়। এদিকে মজুমদার সকল প্রমাণ পেয়ে রইসকে এনকাউন্টারে হত্যা করার পরিকল্পনা নেন। অনেক নাটকীয়তার পরে রইসকে এনকাউন্টার করা হয়।

রইস চরিত্রে শাহরুখের অভিনয় বরাবরের মতোই, চমৎকার যদিও তাঁর নিজস্ব স্টাইলটি থেকে বেরোতে পারেননি। মজুমদারের চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছেন নওয়াজউদ্দীন সিদ্দিকী। প্রতিটি সিনেমায় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রায়ন তাঁকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়। রইসের স্ত্রীর চরিত্রে মাহিরা খানের অভিনয় গতানুগতিক। সিনেমাটির গান ও সুর সুন্দর।

শাহরুখ খানের স্ত্রী গৌরী খান, রীতেশ সিধোয়ানি ও ফারহান আখতার প্রযোজিত সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন রাহুল ধোলাকিয়া। মুভিটি পরিবেশন করেছে শাহরুখ ও গৌরী খানের রেড চিলিস এন্টারটেইনমেন্ট ও ফারহান আখতারের এক্সেল এন্টারটেইনমেন্ট। ইতোমধ্যে জনগণের পকেট থেকে ২৭১ কোটি রুপি আয় করে নিয়েছে, যদিও সিনেমাটি পুরোপুরি 'হিট' হয়নি।

Popular posts from this blog

জারুল (Lagerstroemia Speciosa)

জারুল (Lagerstroemia Speciosa) Photo by: Wrishat Hasan English Name   : giant crepe-myrtle, Queen's crepe-myrtle, banabá plant Bengali Name   : জারুল, বনজারুল, কাঁটাজারুল, বসুঁয়া জারুল, পানিজারুল Scientific Name: Lagerstroemia speciosa Kingdom           :Plantae Family              : Lythraceae  Genus               :Lagerstromia Distribution     :South East Asia,Philippines,India,Bangladesh Defination in Bangla জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ । বাংলাদেশ , ভারত ছাড়াও চীন , মালয়েশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে জারুলের সন্ধান মেলে । নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতে এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তবে শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। মাঝারি আকৃতির এই বৃক্ষটি শাখা-প্রশাখাময়। এর লম্বাটে পাতাগুলো পত্রদণ্ডের বিপরীতে সাজানো থাকে। এই পাতাঝরা বৃক্ষ শীতকালে পত্রশূণ্য অবস্থায় থাকে। বসন্তে নতুন গাঢ় সবুজ পাতা গজায়। গ্রীষ্মে ফোটে অসম্ভব সুন্দর বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুল। জারুল ফুলগুলো থাকে শাখার ডগায়, পাতার ওপরের স্তরে। প্রতিটি ফুলের থাকে ছ'টি করে পাঁপড়ি, মাঝখ

বাঁচাও|Episode 5|Investigation| By Wrishat Hasan

কাটা ছেড়ার  দাগ বিভার পায়ে কী করে আসলো। এর মানে হয়তো তার পড়ে গিয়ে আঁচড় লেগেছে নয়তো তাকে মারধর করা হয়েছে। দুটোর মধ্যে একটা হলেও চিন্তার বিষয় খুঁজে পাচ্ছি না। দুষ্টুমি করলেতো আমার মাও উত্তম অধম দেয় আর পড়ে গেলে তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না। স্কুলের ঘন্টা পড়ে গেলো। বন্ধুদের সাথে গল্প করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম। রাস্তায় একটা পাটকেলকে ফুটবল বানিয়ে লাথি দিতে দিতে উত্তেজিত হয়ে এমন জোরে লাথি দিলাম যে পাটকেল টি গিয়ে একটা কুকুরের গায়ে পড়লো। মনের মধ্যে ভয়ে একটাই কথা "ইটটাকে  ওখানেই পড়তে হলো "। স্থানিয়  ভাষায় যাকে  বলে আইজো দৈড় কাইলো দৈড় দিলাম। দৌড়ে বট  গাছের কাছে যেয়ে পিছনে ফিরে সস্থির চোখে দেখলাম কুকুরটি আর পিছু নিচ্ছে না। কিন্তু কে জানতো বিভা সেখান থেকেই বাসায় যাচ্ছিলো। আমাকে দেখে পুরোই গম্ভীর ভাবে হাই বলে। মনে মনে ভাবছি এইভাবে কেউ কাউকে হাই বলে। কিন্তু এটা  ভুল করে মুখেই বলে ফেললাম। বিভা দেখলাম কিছু মনে না করেই ওর বাড়ির দিকে রওনা হলো। বাড়ি ফিরে ডিনার করার সময় মনে আসলো "বিভার অপহরণের দিন কোনটা"। ঘুম থেকে উঠে স্কুলে গেলাম। এবারো  বিভার পেছনের বেঞ্চে বসলাম। কিন্তু এবার দেখলাব বিভার ঘা

Is Drum Gun Really Returning To Fortnite? Secret Drum Gun Found In Loot Lake Screen!!!

If you guys didn't knew that loot lake bunker is a vault where og guns are vaulted. There will be a reflex event where you can vote for a gun to return is fortnite. The guns are : Drum Gun, Grappler, Bouncer, Tac SMG, Planes & Infinity Blade. But there is a screen on a house of the government. Bouncers And Drum Gun recently got added in the screen.